ফ্রী ফায়ার গেম খেললে কি ক্ষতি হয়? কেন ফ্রি ফায়ার গেমে নিজেকে আসক্ত করবেন না
একটি জিনিসের যেমন খারাপ দিক রয়েছে তেমনি ভাল দিকও রয়েছে। সহজ ভাবে বললে প্রতিটি জিনিসের ভাল এবং মন্দ উভয় দিকই থাকে, ফ্রী ফায়ার এমনই একটি গেম। তবে বাংলাদেশের পেক্ষাপটে ভালোর তুলনায় এই গেমটিতে খারাপ দিক গুলোই বেশি লক্ষনীয়। কিন্তু বর্তমানে আমাদের সামাজিক দিক থেকে বিবেচনা করলে ফ্রি ফায়ার গেমের ভালো দিক এর চেয়ে খারাপ দিকই সবচেয়ে বেশি ফুটে ওঠে যা আমরা সকলেই জানি। আমাদের এটি অজানা নয় যে আমরা বাংলাদেশ বসবাসকৃত যে সকল যুব সমাজের তরুণরা রয়েছে তাদের মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষিত বেকার যুবক। তবুও সেসকল কথা চিন্তা না করে বাবা-মার ওপর নিজেদের ভার চাপিয়ে দিয়ে ফ্রি ফায়ার গেম এর উপর আসক্ত হয়ে যাচ্ছে এসকল যুবকরা। যেটি সমাজের ওপর একটি অত্যন্ত খারাপ প্রভাব ফেলছে। আমরা কেউই জানিনা আমাদের জীবন কি ভাবে পরিচালিত হবে কিংবা আমরা জীবনে কি করতে চলেছি। নিজেদের যদি কোন কিছু করার আগ্রহ না থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের দ্বারা কোন কিছু সম্ভব নয়। ফ্রি ফায়ার গেমের মধ্যে আসক্ত হওয়ার কারণে যুব সমাজের যুবকরা নানান ভাবে পথভ্রষ্ট হচ্ছে। তারা নিজেদের ক্যারিয়ার গঠনের কোন ধরনের উপায় পাচ্ছে না। কেননা তারা নিজের ইচ্ছাশক্তিকে সঠিক জায়গায় ব্যয় করছে না। এছাড়াও একটি কথা আমাদের সকলের জানা ফ্রী ফায়ার গেম খেলার জন্য টাকা খরচের মাধ্যমে ডায়মন্ড করতে হয় এবং সে গুলোকে গেম এর মধ্যেই কাজে লাগানো হয়। যেখানে যুবসমাজের যুবকরা নিজেদের উপার্জন করতে পারে না সেখানে কিভাবে তারা এই খরচগুলো করে। বাবা-মায়ের কষ্টে উপার্জিত টাকা থেকে তারা এ খরচগুলো করে থাকে। যদি এসকল টাকাগুলো তারা অন্য কোন কাজে লাগাতে তাহলে অবশ্যই ভালো কিছু করতে পারতো। এটি হলো যুবসমাজের নতুন সমস্যা। তবে এর মধ্যে কিছু ব্যাতিক্রম যুবসমাজ রয়েছে তাই আমাদের সমাজ সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে সমাজের উন্নয়ন হচ্ছে। আপনি কি চিন্তা করে দেখেছেন এই যুবসমাজের কর্মক্ষমতা কে কাজে লাগিয়ে আমাদের সমাজ কতটা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে?ফ্রী ফায়ার গেম খেললে কি ক্ষতি হয়?
সার্বিকভাবে ফ্রী ফায়ার গেম খেললে কি ক্ষতি হয় এর হিসাব নির্ণয় করা কঠিন। তবে একটি কথা স্পষ্টভাবে বলা যায় আমাদের যুব সমাজের উপর এর প্রভাব ব্যাপক সময় যাবত চলতে থাকে। বেকারত্ব থেকে শুরু করে অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে এই গেমে আসক্তির কারণে। তবে আমরা এখানে পয়েন্ট নোট ডাউন করবো যেগুলো থেকে আপনি বেশি ধারণা নিতে পারবেন ফ্রি ফায়ার গেম থেকে সামাজিক অবক্ষয়ের বিষয়ে।- সমাজের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি
- সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং বাবা মা ও প্রিয়জনদের সাথে খারাপ ব্যবহার
- পড়ালেখায় অমনোযোগী তা
- জীবনের মূল্যবান সময়কে নষ্ট করে দেওয়া
- বেশি গেম খেলে চোখ ও ব্রেনের ক্ষতি
সমাজের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি
আমাদের মধ্যে যারা ফ্রী ফায়ার গেমটি খেলে আপনারা একটি বিষয় লক্ষ্য করলে দেখবেন তারা কিন্তু সমাজের থেকে অনেকটাই দূরে সরে গিয়েছে। বা এমন ভাবে বলা যেতে পারে তারা নিজেদেরকে দূরে সরিয়ে রাখছেন গেমের জগতে থাকতে চাচ্ছেন এটাই তাদের নেশা এবং এটাই তাদের পেশা বলে মনে করছেন। নিজের অবসর সময়কে গেম খেলার মাধ্যমে নিজেকে প্রফুল্ল রাখা কোনো খারাপ বিষয় নয়, তবে বর্তমান যুবসমাজ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এই গেম খেলার কারণে সকল সামাজিক কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখছেন।সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং বাবা-মা ও প্রিয়জনের সাথে খারাপ ব্যবহার
অনেক সময় মানসিক নানান কারণে তারা পিতা-মাতার সাথে খুবই বাজে ব্যবহার করে থাকে। যেসকল বাচ্চারা ফ্রি ফায়ার গেমের প্রতি আসক্ত তাদের বাবা-মা এই বলতে পারবেন তাদেরকে পড়ালেখা করার জন্য তাদের কি পরিমাণ পরিশ্রম করতে হয়, তারা কথা শোনে না বিভিন্ন সমস্যা গুলি সম্পর্কে তারা সঠিকভাবে বলতে পারবেন। যে কোন জিনিসের প্রতি আপনি যদি আসক্ত হয়ে যান তাহলে ঐ আসক্তির কারণে আপনি কি করছেন তা আপনি নিজেও জানেন না। হোক সেটা মাদক কিংবা ফ্রী ফায়ার। একটি গেমের প্রতি সিরিয়াস হয়ে টাকা আরোহণের জন্য, অনেক সময় নানান ধরনের অসৎ কাজে লিপ্ত হয়ে যায় আমাদের যুব সমাজ। কিছুদিন আগে একটি সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছিলাম ফ্রী ফায়ার এর জেরে বন্ধুর সাথে ঝগড়ার কারণে বন্ধুর হাতেই বন্ধু খুন হয়েছিল। তাহলে একটিবার চিন্তা করে দেখুন গেমের প্রতি কতটা আসক্তি থাকলে সে কাজটি করতে পেরেছে সেই যুবক। শুধু এ ধরনের ঘটনায় নয় এই গেমের কারণে অনেক ধরনের ঘটনা ঘটেছে যা সমাজের আড়ালে এখনো পর্যন্ত লুকিয়ে আছে। সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় কতটা হয়েছে জ্যামের কারণে তা বুঝতে পারছেন।পড়ালেখায় অমনোযোগী তা
ফ্রী ফায়ার প্রতি আসক্ত হয়ে বর্তমানে বেশিরভাগ ছাত্র ছাত্রী পড়ালেখা কে অপশনাল বলে ভাবছেন। যদি নাই তাই না হয় তারা কেন পড়ালেখা সময়ে মোবাইল ফোনে গেম খেলছেন। মূলত এখানে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ও কিছুটা দুর্বল হয়ে যাওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা এই কাজগুলো করছেন। পূর্বে আমরা যখন ছোট ছিলাম শিক্ষাব্যবস্থা অনেক কঠিন ছিল এবং আমাদেরকে প্রচুর পরিমাণ পড়ালেখা করতে হতো। বর্তমানে ছাত্র ছাত্রীরা মুখস্ত বিদ্যা বা বিভিন্ন টিচারের কাছে প্রাইভেট পড়ে সামান্য নোটবুক পড়েই পরীক্ষায় পাস করা যায়। যাইহোক গেম পড়ালেখায় মনোযোগী তার একটি বিশেষ কারণ, তাই নিজেকে সফল করতে এবং ক্যারিয়ারকে সঠিকভাবে ধরে রাখতে স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হতে এখনই গেম কে দূরে রাখা উচিত।জীবনের মূল্যবান সময়কে নষ্ট করা
শুধু যে ছাত্র-ছাত্রীরাই ফ্রী ফায়ার গেমটি খেলছেন এমনটা নয়। বিশেষ করে এই গেমটি খেলে থাকেন কর্মক্ষম যুবসমাজ। কোন ছাত্র-ছাত্রী যদি অর্থাভাবে বা অন্য কোনো সমস্যার কারণে পড়ালেখা ছেড়ে দেন তবে তার উচিত হবে সঠিক কাজে নিজেকে মনোনিবেশ করা এবং সঠিক কাজকে শিক্ষার মাধ্যমে নিজের ভবিষ্যৎকে উজ্জ্বল করতে চেষ্টা করা। আমি জোর অনুরোধ করছি আপনারা যারা ফ্রী ফায়ার গেমটি খেলেন তারা অবশ্যই অবসর সময়ে এই গেমটি কে শুধুমাত্র এন্টারটেনমেন্ট হিসাবে খেলবেন। So, please নিজের কাজকে গুরুত্ব দিন সঠিক কাজটি শিখুন যুবক সময় আপনি যেই কাজটি শিখবেন ওই কাজটি আপনার ভবিষ্যতে কাজে আসবে।বেশি গেম খেলে চোখ ও ব্রেনের ক্ষতি
ফ্রী ফায়ার গেম খেলে সামাজিক-অর্থনৈতিক শারীরিক-মানসিক কর্ম জীবন থেকে নানাবিধি ক্ষতির পাশাপাশি চৌকো ব্রেনের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে থাকে। তাই আমাদের ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে বিষয়টি বোঝা উচিত ছেলে সন্তানের হাতে মোবাইল দেওয়ার পূর্বে অবশ্যই চিন্তা করতে হবে সে আসলে মোবাইলটি কি কাজে ব্যবহার করবে।বাংলাদেশ থেকে ফ্রী ফায়ার ব্যান
আপনি কি জানেন বাংলাদেশ থেকে ফ্রী ফায়ার ব্যান হওয়ার কারণ কি? বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সরকার এ বিষয়টি ইতিমধ্যে বুঝতে পেরেছে যে বর্তমানে আমাদের যুবসমাজের তরুণরা দেশের টাকা নষ্ট করে বিদেশি এই গেমটির পেছনে নিজেদের ক্যারিয়ারের সব টুকু বিসর্জন দিচ্ছে। সরকারের এই উদ্যোগ নেয়ার কারণ হচ্ছে ফ্রি ফায়ার গেম খেলার জন্য ডায়মন্ড এর মাধ্যমে আমরা যে সকল টাকাগুলো খরচ করে থাকি সেসকল টাকাগুলো বিদেশি কোম্পানি গেরিনা নিয়ে যাচ্ছে। এতে করে আমাদের দেশের ক্ষতি হচ্ছে বরংচ লাভ হচ্ছে না। ব্যান হওয়া তে কি বাংলাদেশে ফ্রী ফায়ার খেলা বন্ধ হয়ে গেছে? অবশ্যই না, কারণ বর্তমান প্রযুক্তির যুগে এমন কিছু নেই যে করা যায় না। তেমনি ফ্রী ফায়ার গেমটি বাংলাদেশ থেকে ব্যান করে দেয়া হলেও, ভিপিএন ব্যবহার করে বাংলাদেশের তরুণরা এখনো পর্যন্ত ফ্রি ফায়ারে নিজেদের সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করি আপনি কিছুটা হলেও বুজতে পারছেন ফ্রী ফায়ার গেম খেললে কি ক্ষতি হয়।ফ্রী ফায়ার গেম খেলে কি কোন লাভ আছে
ফ্রী ফায়ার গেমটি যদি আপনি মজা হিসেবে কিংবা শুধুমাত্র নিজেদের টাইম পাস করার জন্য খেলতে পারেন তাহলে এই গেমটি আপনার জন্য খুবই ভাল একটি গেম। এখন প্রশ্ন হলো আমাদের ফ্রী ফায়ার গেমটি কি শুধুমাত্র ক্ষতি করছে? না শুধুমাত্র ক্ষতি করছে এমনটি নয়, অনেক বেকার যুবক ইউটিউব, ই-স্পোর্টসে নানান ভাবে নিজেদের কে প্রতিষ্ঠা করেছে এই গেম জগতের মাধ্যমে। তবে আসল কথা হচ্ছে দেশের দশজন যদি নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করতে পারছে তাহলে বাকি সকলেই লাখ লাখ টাকা নষ্ট করছে। সেই তুলনায় বুঝাই যাচ্ছে যে ফ্রি ফায়ার খেলে লাভের তুলনায় ক্ষতি বেশি হচ্ছে। আপনারা যদি এই গেমটি কে শুধুমাত্র টাইমপাস কিংবা নিজেদের মানসিকভাবে শান্তির জন্য খেলতেন তাহলে কখনই এই গেমটি কে বাংলাদেশ সরকার ব্যান করে দিত না। দেশের ক্ষতি হচ্ছে বিদায় বাংলাদেশ সরকার এমন একটি সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। এখন অনেকেরই প্রশ্ন থাকতে পারে আমরা তো নিজেদের টাকা খরচ করে তবে গেমটি খেলছি? কিন্তু আপনি এই বিষয়টি মনে রাখবেন আপনার দেশে যে সকল টাকাগুলো রয়েছে সেসকল টাকাগুলি আপনার দেশের অর্থায়ন। আপনি যখন ফ্রি ফায়ার এ ডায়মন্ড কেনার জন্য এই টাকাটা খরচ করছেন। তখন সে টাকা দিয়ে সরাসরি মালয়েশিয়া আবিষ্কৃত গেরিনা কোম্পানির একাউন্টে জমা হচ্ছে। যাতে করে আমাদের দেশের অর্থায়ন কমছে এবং আমাদের কোন ধরনের লাভ হচ্ছে না বরং ক্ষতিই হচ্ছে।ফ্রী ফায়ার গেম খেললে কি ক্ষতি হয়?
ফ্রী ফায়ার গেম খেলে সামাজিক-অর্থনৈতিক শারীরিক-মানসিক কর্ম জীবন থেকে নানাবিধি ক্ষতির পাশাপাশি চোখ ও ব্রেনের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে থাকে। তাই বলা যায় ফ্রী ফায়ার গেম খেললে কি ক্ষতি হয় তার শেষ নেই।